বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া একজন উবার ইটস রাইডারের পরিবার

উবার ডেলিভারি কর্মীদেরও অন্যান্য কর্মীদের মতো একই রকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া উচিত- এ রকম যুক্তি দিয়ে দেদি ফ্রেডির পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি পেশ করেছে ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন।

Uber Eats

Source: SBS

সিডনির ইনার ওয়েস্টে কর্মরত অবস্থায় নিহত একজন উবার ইটস রাইডারের বিধবা স্ত্রী ৮৩০,০০০ ডলারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করে আবেদন জমা দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার লেবার আইনগুলোতে এটি একটি ল্যান্ডমার্ক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে, ইন্দোনেশিয়ায় জন্ম-নেওয়া দেদি ফ্রেডি, ৩৬, খাবার ডেলিভারি করার সময়ে মেরিকভিলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

মঙ্গলবার বিকেলে মিস্টার ফ্রেডির বিধবা স্ত্রী নিয়োমান সুনার্তি, যিনি ইন্দোনেশিয়ায় বাস করেন, ও তার চার বছর বয়সী ছেলে মোহাম্মদের পক্ষ থেকে ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আইনজীবিরা স্টেট ইনস্যুরার আই-কেয়ারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি করে আবেদন জমা দিয়েছেন।
Transport Workers Union (TWU) National Secretary Michael Kaine.
Transport Workers Union (TWU) National Secretary Michael Kaine. Source: AAP
অস্ট্রেলিয়ান লেবার ল’জ-এ উবার ড্রাইভার এবং ডেলিভারি রাইডাররা বর্তমানে স্বাধীন কন্ট্রাক্টর হিসেবে বিবেচিত হন। তাই তারা অন্যান্য কর্মীদের মতো একই রকমের সুযোগ-সুবিধা লাভের অধিকারী হন না।

আই-কেয়ার যদি ক্ষতিপূরণের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে ওয়ার্কার্স কমপেনসেশন কমিশনে একটি ল্যান্ডমার্ক টেস্ট কেস দাখিল করবে ইউনিয়ন।

ইউনিয়ন বলেছে, ওয়ার্কার্স কমপেনসেশনের জন্য স্বাধীন কন্ট্রাক্টরদের অধিকার নিয়ে এ ধরনের কেস এটাই প্রথম হবে।

ইউনিয়নের ন্যাশনাল সেক্রেটারি মাইকেল কেইন এক বিবৃতিতে বলেন,

“উবারের মতো এ কোনো কিছুর জবাবদিহিতার জন্য এটাই সর্বশেষ পথ, যা আমরা অবলম্বন করতে যাচ্ছি। তারা আমাদের লেবার ল’গুলো উপেক্ষা করছে এবং রাইডার ও তাদের পরিবারগুলোকে আক্ষরিকভাবেই রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছে।”

“ফুড ডেলিভারি রাইডারদের জন্য, ওয়ার্কার্স কমপেনসেশন অধিকারসমূহ বিস্তৃত করার জন্য, আমরা এই দাবি নিয়ে একটি টেস্ট কেস হিসেবে, ওয়ার্কার্স কমপেনসেশন কমিশন পর্যন্ত যাব।”
ইউনিয়ন যুক্তি দিচ্ছে যে, নিউ সাউথ ওয়েলস ওয়ার্কার্স কমপেনসেশন ল’জ অনুসারে, মিস্টার ফ্রেডির পরিবার এককালীন প্রদত্ত অর্থ হিসেবে ৮৩৪,০০০ ডলার এবং তার নির্ভরশীল শিশু-সন্তানের জন্য সাপ্তাহিক ১৪৯ ডলার এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ পাওয়ার অধিকারী।

উবার বর্তমানে প্রাইভেট ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থা করে । রাজ্য আইনের অধীনে এগুলোর অর্ধেকেরও কম পাওয়া যায়। বড় বড় কোম্পানির জন্য এটি বাধ্যতামূলক শর্ত নয়।

মিস্টার কেইন বলেন,

“রাইডারদের শোক-সন্তপ্ত পরিবারগুলোর উচিত নয় উবারের মতো বহুজাতিক দৈত্যের সঙ্গে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া। তবে, এসব নিয়ন্ত্রণে ফেডারাল সরকার অসম্মত হওয়ায় তাদের জন্য আর কোনো পথ খোলা নেই।”

“রাইডারদের সর্বনিম্ন হার নিয়ে কোনো অধিকার নেই, প্রশিক্ষণ কিংবা যথাযথ সুরক্ষা সরঞ্জাম এবং তারা আহত বা নিহত হলে এসব ক্ষেত্রে কোম্পানির খেয়াল-খুশি যে, তারা অথবা তাদের পরিবারগুলোকে কভার প্রদান করা হবে কিনা।”
বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনার পর, ফুড ডেলিভারিং কোম্পানিগুলো এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রতি ক্রমবর্ধমান চাপ রয়েছে যে, কর্মীদেরকে ভাল প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম প্রদানসহ, যেমন, হেলমেট এবং হাই-ভিজ জ্যাকেট, নিরাপত্তা দিতে হবে।

ডেলিভারি রাইডাররা । কর্মক্ষেত্রে অনিরাপদ অবস্থার জন্য এটাও একটা কারণ।

গত মাসে ডেলিভারি রাইডার অ্যালেক্স রক্সবরোহ বলেন,

“এটা আমার সঙ্গেও হতে পারতো। আমি যদি বেঁচেই না থাকি, তাহলে অর্থ উপার্জন করে ফায়দা কী?”

“আমাদেরকে যে-পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয়, তা পুরোপুরিভাবেই এই অবস্থার জন্য এবং আপনি কতোটা নিরাপদভাবে আমাদের শিফটের সময়ে রাইড করতে পারবেন তার জন্য দায়ী।”
উবার ইটস এর একজন মুখপাত্র এসবিএস নিউজকে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা ডেলিভারি রাইডারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেমন, রোড অ্যান্ড বাইক সেফটি ট্রেনিং মডিউল, বার্ষিক সাইক্লিং সেফটি টেস্ট এবং সাইক্লিং-স্পেসিফিক নেভিগেশন।

কোম্পানিটি তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনারও ব্যবস্থা নিয়েছে।

সেই মুখপাত্র বলেন,

“নমনীয় এবং স্বাধীন কাজের সুযোগ এমনভাবে দেয় উবার যা এর আগে সম্ভবপর ছিল না। কোনো পার্টনারের দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই; ম্যানেজার বা বসের কাছে রিপোর্ট করারও কোনো শর্ত নেই পার্টনারদের।”

“ওয়ার্কার্স কমপেনসেশন লেজিসলেশনের অধীনে নিয়োগদাতা হিসেবে একই রকম অধিকার, বাধ্যবাধকতা এবং দায়-দায়িত্ব নিয়ে তা করাটা বাস্তবসম্মত কিংবা অর্জনযোগ্য নয়। কারণ, নিয়োগদাতাদের মতো উবারের সেই একই পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা কিংবা তদারক-ক্ষমতা নেই।”

গত মাসে । তারা ফুড ডেলিভারি ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তদন্ত করবে এবং দেখবে যে, যে-সব কারণে সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো কি “এড়ানো যেত কিনা”।

গত মাসের শেষের দিকে মিনিস্টার ফর বেটার রেগুলেশন কেভিন অ্যান্ডারসন বলেন, ভবিষ্যতে মর্মান্তিক ঘটনাগুলো প্রতিহত করার জন্য আরও কঠোর নিরাপত্তা আইনসমূহের প্রয়োজন আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেন,

“কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি মৃত্যুই মর্মান্তিক। যারা কাজে যান তাদের প্রত্যেকেরই নিরাপদে ঘরে ফেরা উচিত।”

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 10 December 2020 8:28pm
By Maani Truu
Presented by Sikder Taher Ahmad


Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand