করোনা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ভারতে ইসলাম-ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে

করোনা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ভারতে ইসলাম-ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ শুরু করেছিল অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)।তার জবাবে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন,ভারত মুসলিমদের কাছে স্বর্গ।তাঁর পাল্টা অভিযোগ, অনেকে এ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং ষড়যন্ত্র করছে।সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী নকভি বলেছেন, ভারতের মুসলিমরা সমৃদ্ধশালী।যারা এই পরিবেশকে কলুষিত করার চেষ্টা করে তারা তাঁদের বন্ধু হতে পারে না।নকভির কথায়,সংখ্যালঘু-সহ দেশের সমস্ত নাগরিকের সাংবিধানিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত রয়েছে।

For India’s Laborers, Coronavirus Lockdown Is an Order to Starve

For India’s Laborers, Coronavirus Lockdown Is an Order to Starve Source: The New York Times

এদিকে ওআইসি-র তরফে তোলা অভিযোগের জবাবে নকভি বলেছেন,আমরা দৃঢ় চিত্তে আমাদের কাজ করে যাচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন, তখন তিনি ১৩০ কোটি নাগরিকের অধিকার ও কল্যাণের কথাই বলেন। যদি কেউ এটা দেখতে না-পান, তা হলে এটা তাঁদের সমস্যা।তাঁর মতে, ধর্মীয় নিরপেক্ষতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রাজনৈতিক ফ্যাশন নয়, তা ভারত এবং ভারতবাসীর কাছে রাজনৈতিক প্যাশন।

মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন নকভি। এমন বিপজ্জনক শক্তির থেকে সতর্ক থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন।দেশে করোনা আবহের মধ্যেই বিতর্ক দানা বাঁধে দিল্লিতে নিজামউদ্দিন মরকজের ধর্মীয় সমাবেশ ঘিরে।তা নিয়েই ওআইসি টুইটারে অভিযোগ তোলায় বিতর্ক শুরু হয়ে যায়।

এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে করোনা মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫।রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানিয়েছেন,চিকিৎসকদের নিয়ে তৈরি করোনা সংক্রান্ত অডিট কমিটি আরও তিন জনের নাম মৃতের তালিকায় যোগ করেছেন। মুখ্যসচিবের দাবি,ওই তিন জনই করোনায় মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে অডিট কমিটি।রাজীব সিংহ বলেছেন,২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২৯।

মঙ্গলবার বিকেলে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৭৪।সোমবার সেই সংখ্যা ছিল ২৪৫।গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও করোনা রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি।তিনি জানিয়েছেন, যে ২৯ জন গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন,তাঁরা কলকাতা, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, নদিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা।উত্তরবঙ্গে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি।

অন্যদিকে কলকাতায় রাস্তায় নেমে লকডাউন নিয়ে সচেতনতার প্রচার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বিভিন্ন এলাকা নিজে ঘুরে দেখেন লকডাউন কতটা কার্যকর হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার পার্ক সার্কাসে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাইকে এলাকার মানুষের উদ্দেশে বলেছেন,নিজে ভাল থাকার জন্য,পরিবার ও সমাজকে ভাল রাখার জন্য লকডাউন মানুন।

লকডাউন মেনে চলার অনুরোধের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে, প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসের জোগান থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, লকডাউনের জন্য মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু তার আগে মানুষকে বাঁচতে হবে।পার্কসার্কাসের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যান রাজাবাজারে।গিয়েছিলেন তপসিয়াতেও।সেখানেও তিনি গাড়ি দাঁড় করিয়ে জনগণকে অনুরোধ করেন, লকডাউন মানতে।মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কারও খাবারের সমস্যা হোক বা হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন,আপনারা পুলিশকে বলুন। পুলিশকে আমার নির্দেশ দেওয়া আছে, তাঁরা মানুষকে সাহায্য করবে।

এদিকে করোনার তথ্য গোপন নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য বিতর্কের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে গুরুসদয় দত্ত রোডে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ কার্যালয়ে যান মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।সেখানেই রয়েছেন পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল।সেখানে মুখ্যসচিবের সঙ্গে কেন্দ্রীয় দলের বৈঠক হয়।এর পর বিকেল পাঁচটা নাগাদ কেন্দ্রীয় দলটি বিএসএফের অতিথিশালা থেকে বেরিয়ে যাদবপুরের দিকে রওনা হন।তাঁদের সঙ্গে রয়েছে বিএসএফ এবং কলকাতা পুলিশ।এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় দলটি বিএসএফের অতিথিশালা থেকে বেরিয়ে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে যায়।

সেখান কিছু ক্ষণ সময় কাটিয়ে ফের তারা বিএসএফ অতিথিশালায় ফিরে আসে।তার পরে ওই সদস্যদের সঙ্গে সেখানে দেখা করতে যান কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা) দেবস্মিতা দাস-সহ কয়েক জন পুলিশ আধিকারিক।তাঁরা চলে গেলে কেন্দ্রীয় দলের নেতৃত্বে থাকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব চন্দ্র জানান,তাঁরা বিমানবন্দরে নেমে নাইসেড এবং নবান্ন ছাড়া কোথাও যাননি।

নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়।কোন কোন জায়গায় যাবেন,তাঁদের সফরের কী পরিকল্পনা তা নিয়ে সবিস্তারে জানানো হয় মুখ্যসচিবকে।এ বিষয়ে রাজ্যের সহযোগিতাও চাওয়া হয়।অপূর্ব আরও জানান, বেরোতে গেলে তাঁদের জানানো হয়, লকডাউন চলছে।তাঁরা যেন না বেরোন। অপূর্ব চন্দ্রের অভিযোগ, অন্যান্য রাজ্যে যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গিয়েছে, তারা রাজ্য সরকারের সব রকম সহযোগিতা পাচ্ছে। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন সহযোগিতা করছে না তা বুঝতে পারছেন না। সে কারণে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

 


Share
Published 21 April 2020 11:53pm
By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand