হাজার হাজার দক্ষ অভিবাসী যে স্তরের চাকরি করছেন তার চেয়ে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক বেশি

প্রায় এক চতুর্থাংশ দক্ষ অভিবাসী যারা স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন তারা বর্তমানে যে পদে কাজ করছেন তার চেয়ে তাদের দক্ষতা বেশি- স্বাভাবিকভাবেই এটি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ জনশক্তির অর্থনীতিকে বঞ্চিত করছে।

There are concerns migrants are being locked out job opportunities appropriate for their skill level.

Source: AAP

গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী দক্ষ অভিবাসীদের প্রায় ২৩ শতাংশ - বা প্রায় ৩৪,০০০ লোক - যে চাকরিতে কর্মরত তা তাদের দক্ষতার স্তরের নীচে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
  • প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০১৩ থেকে ২০১৮-এর মধ্যে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই, এই বৈষম্য অভিবাসী কর্মীদের কমপক্ষে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার মজুরি থেকে বঞ্চিত করেছে।
একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রতি চার জনের মধ্যে একজন দক্ষ অভিবাসী তাদের বর্তমান কাজের জন্য অধিকতর যোগ্য।

অস্ট্রেলিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কমিটি রিপোর্টে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী দক্ষ অভিবাসীদের প্রায় ২৩ শতাংশ - বা প্রায় ৩৪,০০০ লোক - যে চাকরিতে কর্মরত তা তাদের দক্ষতার স্তরের নীচে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে এর সাধারণ কারণ হিসাবে যেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে আছে, অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতার অভাব, পাশাপাশি স্থানীয় নেটওয়ার্কগুলিতে অ্যাক্সেস বা প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া, তার ওপর ভাষাগত বাধা।
দেখা গেছে যে হিসাবরক্ষক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং শেফ যারা অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন তাদের মধ্যে পছন্দের পেশায় কাজ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

প্রতিবেদনে দক্ষ অভিবাসীদের মধ্যে অনেককেই চাকরি না পেয়ে ট্যাক্সি চালনার কাজ করতে হচ্ছে কারণ তারা তাদের পেশায় কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না।

সি-ই-ডি-এ'র প্রধান নির্বাহী মেলিন্ডা সিলেন্টো বলেন যে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ অভিবাসন ব্যবস্থা দেশের উপকার করেছে, তবে এমন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বিশেষত করোনভাইরাস মন্দা থেকে বেরিয়ে আসার লড়াইয়ে দেশকে আরো উন্নততর কিছু করতে হবে।

তিনি বলেন, “কভিড -১৯ সমস্যা থেকে বের হয়ে যাবার সাথে সাথে আমাদের একটি দক্ষ মাইগ্রেশন সিস্টেমের দরকার যা অর্থনীতির জন্য হবে চটপটে এবং কার্যকরী।”

"আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে দক্ষতার ঘাটতি সম্পর্কে আমাদের সদস্যদের কাছ থেকে আমরা ইতিমধ্যে বেশ উদ্বেগের কথা শুনে আসছি, এবং সেই সাথে তারা ডিজিটাল এবং ডাটা প্রযুক্তির সুযোগসহ অর্থনীতির বিকাশ এবং বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারছে না।"

দক্ষ কর্মীরা কীভাবে বেশি দক্ষতা থাকার পরও কম দক্ষতার চাকরি করছেন এবং মজুরি হারাচ্ছেন তা অনুধাবন করতে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০১৩ থেকে ২০১৮-এর মধ্যে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই, এই বৈষম্য অভিবাসী কর্মীদের কমপক্ষে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার মজুরি থেকে বঞ্চিত করেছে।

অভিবাসীদের এই দক্ষতা কাজে লাগাতে না পেরে অস্ট্রেলিয়ার উৎপাদনশীলতা এবং উদ্ভাবনী সক্ষমতা কমে যাচ্ছে, যা অর্থনীতিতে বিস্তৃত প্রভাব ফেলছে।

করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন সীমান্ত বন্ধ হওয়ার কারণে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এই প্রথম ঋণাত্মক নেট অভিবাসনের মুখোমুখি হয়েছে, যা এই প্রতিবেদনটিতে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে এটি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী দক্ষ মাইগ্রেশন সিস্টেমটি ভেঙে পরে নি - তবে সতর্ক করে দিয়েছে যে এটি তার পুরো অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উপলব্ধি করছে না।

"এমন একটি ব্যবস্থা আমাদের প্রয়োজন যা সময়োপযোগী এবং অতি প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মী আনতে পারবে, তা না হলে আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাব," বলছিলেন মিসেস সিলেন্টো।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে অস্ট্রেলিয়ার করোনাভাইরাস-উত্তর মাইগ্রেশন কর্মসূচি ঢেলে সাজাতে তিনি "মুক্ত মন" নিয়ে এগিয়ে যাবেন, যখন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পুনরায় শুরু হবে।

এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রিজিওনাল এলাকায় কর্মী চাহিদা মেটাতে ভিসা শর্ত সহজ করা, এবং যেসব শিল্পে দক্ষকর্মীর প্রয়োজন সেগুলো টার্গেট করা।
অস্ট্রেলিয়ায় দক্ষ অভিবাসীদের আকৃষ্ট করতে ফেডারাল সরকার গ্লোবাল ট্যালেন্ট স্কিমসহ মাইগ্র্যাশন সিস্টেমে কিছু পরিবর্তন এনেছে।

কিন্তু সি-ই-ডি-এ এই অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে বলেছে এটি একটি "ব্যান্ড-এইড" বা সাময়িক ব্যবস্থা, যেন একটি "রিভলভিং ডোর" পদ্ধতি মানে একদিকের সমাধান করলেও অন্যদিকে সমস্যা ঠিকই রয়ে যায়।
প্রতিবেদনে দক্ষ অভিবাসী এবং নিয়োগকর্তাদের আরও ভালভাবে সংযোগ স্থাপনের জন্য দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি মেলে এমন একটি সরকার নিয়ন্ত্রিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এটি আরো পরামর্শ দিয়েছে যে স্থায়ী অভিবাসীরা যাতে স্থায়ী ছয় বছরের পরিবর্তে চার মাস পর বেকার ভাতার সুবিধাগুলো পায়। এটি তাদের জন্য উপযুক্ত কাজ খুঁজে পেতে আরও ভাল সুযোগ দেবে।

"যা প্রয়োজন তা হলো কাঠামোগত এবং টেকসই পরিবর্তন এবং এমন একটি সিস্টেম গড়ে তোলা যা দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন মেটাতে বিকশিত হতে পারে," মিসেস সিলেন্টো বলেন।

আরো দেখুন: 

Share
Published 30 March 2021 2:40pm
By Tom Stayner
Presented by Shahan Alam


Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand