আফগানিস্তানে অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল ফোর্সের নিয়ম বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে

the report, with redactions, by the Inspector-General of the Australian Defence Force Afghanistan Inquiry in Canberra

Redacted parts are seen of the report by the Inspector-General of the Australian Defence Force Afghanistan Inquiry in Canberra, Source: AAP

আফগানিস্তানে অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল ফোর্সের যুদ্ধাপরাধ করার যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এরপর, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির প্রতি ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।


হাইলাইটস

  • অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে:আফগানিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার জনগণের কাছে।
  • এস-এ-এস এর সেকেন্ড স্কোয়াড্রন সৈন্যদল ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
  • এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের বদনাম এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্ট্রেলিয়ার সুনাম নষ্ট হবে ।

চার বছর তদন্তের পর, আফগানিস্তানে অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল ফোর্সের অবৈধ হত্যাকাণ্ডের বিষয়গুলো সুচিন্তিতভাবে গোপন করার বিষয়টি বিস্তারিত উঠে এসেছে বিচারপতি পল ব্রেয়ার-রাটন এর একটি প্রতিবেদনে।
অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে দু’জায়গায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে: আফগানিস্তানের জনগণের কাছে এবং অস্ট্রেলিয়ার জনগণের কাছে।

অস্ট্রেলিয়ান স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে চার বছর তদন্তের পর বিচারপতি পল ব্রেয়ার-রাটন অনেক সম্পাদনা করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন।এই রিপোর্টটিতে ২৩ টি যুদ্ধাপরাধের তথ্য পাওয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে, হত্যা, নির্যাতন এবং অস্ট্রেলিয়ার সৈন্যদের এসব বিষয় গোপন করার মতো বিষয়গুলো।

রিপোর্টটিতে বিচারপতি ব্রেয়ার-রাটন ৫৭ টি ঘটনা তদন্তের কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এগুলোকে ‘সম্ভবত, অস্ট্রেলিয়ার সামরিক ইতিহাসে নিকৃষ্টতম অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করেছেন। ৩৯ জন আফগান বেসামরিক লোক, যাদের মধ্যে কিশোর ও বন্দিরাও ছিল, রিপোর্টটিতে ১৯ জন অস্ট্রেলিয়ান সৈনিকের বিরুদ্ধে তাদেরকে হত্যা করার অভিযোগ আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

২০০৫ থেকে ২০১৬ সালের মাঝে এসব ঘটনা ঘটে। তবে এগুলো যুদ্ধাবস্থায় ঘটেনি। এগুলো সে-রকম সৈন্যদের সঙ্গেও ঘটেনি। আর এগুলো তারাই ঘটিয়েছে, যারা যুদ্ধ-সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।

জুনিয়র (বয়োঃকনিষ্ঠ) সৈন্যদেরকে তথাকথিত “ব্লাডিং” অনুশীলনে বাধ্য করা হয়েছে। বন্দিদেরকে গুলি করার মাধ্যমে তারা জীবনে প্রথমবারের মতো কাউকে হত্যা করার অভিজ্ঞতা অর্জন করে। আর, এসব ঘটনা আড়াল করার জন্য অস্ট্রেলিয়ান সৈন্যরা ভিক্টিমের মৃতদেহের পাশে অস্ত্র-শস্ত্র রেখে দিত।

চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্স অ্যাঙ্গাস ক্যাম্পবেল বলেন, এসব ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের বদনাম হয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অস্ট্রেলিয়ার সুনাম নষ্ট হয়।

এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির এক মুখপাত্র বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কাছ থেকে একটি ফোন কল পেয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তানে কতিপয় অস্ট্রেলিয়ান সৈন্যের অসদাচরণের জন্য গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি’ এবং ‘ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত’ করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।

জেনারেল ক্যাম্পবেল বলেন, তিনিও তার আফগান প্রতিপক্ষ, আফগানিস্তান আর্মির চিফ অফ স্টাফ, জেনারেল ইয়াসিন জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।


তিনি বলেন, রিপোর্টটির সমস্ত সুপারিশ, ১৪৩ টি সুপারিশই তিনি মেনে নিয়েছেন। অপারেশনাল স্ট্রাকচার, ওভারসাইট মেকানিজম এবং বাহিনীর সংস্কৃতিতে সামগ্রিকভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথাও বলেন তিনি।

এস-এ-এস এর সেকেন্ড স্কোয়াড্রন সৈন্যদল ভেঙ্গে দেওয়া হবে।অস্ট্রেলিয়ার এস-এ-এস এবং কমান্ডো রেজিমেন্টগুলোর মাঝে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনার জন্য একটি নতুন প্যানেল কাজ করবে।

জেনারেল ক্যাম্পবেল বলেন, যেভাবে রিপোর্টটিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির জন্য অপেক্ষা না করেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে এবং যারা এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাদের মিলিটারি মেডেলগুলোও পর্যালোচনা করা হবে।

জেনারেল ক্যাম্পবেল বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে আফসোস করেন। কারণ, যারা সেনাবাহিনীর চেইন-অফ-কমান্ডের শীর্ষে আছেন, এমনকি তিনি নিজেও, এই বিষয়টি দিনের আলোয় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেন নি।

এই রিপোর্টটিতে নৈতিকতার বিষয়ে এবং সিস্টেমিক ইস্যুর প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। ডিফেন্স মিনিস্টার লিন্ডা রেইনল্ডস বলেন, “খুবই গুরুতর বিষয়” রিপোর্টটিতে তুলে ধরা হয়েছে।

আর্মি ল’ইয়ার গ্লেন কোলামিটস এই তদন্তে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, তার ক্লায়েন্টদের জন্য এই রিপোর্টটি তীব্র আবেগের সৃষ্টি করেছে।
মিলিটারি সোশিওলজিস্ট ড. সামান্থা ক্রোম্পফিটস বলেন, এই রিপোর্টটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলবে।

অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশনের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর নেইল জেমস বলেন, এই রিপোর্টটি দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ড. ও’ব্রায়েন বলেন, এই সফল ক্রিমিনাল প্রসিকিউশন সম্পন্ন করতে অনেক বাধা এসেছে। তারপরও এটা সম্ভব হয়েছে।

ভেটেরান এবং তাদের পরিবারের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় সাপোর্ট ও কাউন্সেলিং সেবাসমূহ রয়েছে।ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের সার্বক্ষণিক সাপোর্ট লাইনটি একটি গোপনীয় টেলিফোন এবং অনলাইন সেবা। এটি এডিএফ সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য। কল করুন 1800 628 036 নম্বরে।

 

 


Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand