বীর প্রতীক ওডারল্যান্ডের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আহসান খান

বাংলাদেশের স্বাধীনতা-যুদ্ধে একমাত্র বিদেশী বীর প্রতীক ওডারল্যান্ডের নামে ঢাকার গুলশানে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা-যুদ্ধে একমাত্র বিদেশী বীর প্রতীক ওডারল্যান্ডের নামে ঢাকার গুলশানে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। Source: Kamrul Ahsan Khan

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর, অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসেন মুক্তিযোদ্ধা ওডারল্যান্ড। প্রবাসী বাংলাদেশী, মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আহসান খান পরবর্তীতে এই বিদেশী বীর প্রতীক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা-যুদ্ধে একমাত্র বিদেশী হিসেবে বীর প্রতীক খেতাব পান ডাচ-অস্ট্রেলিয়ান উইলিয়াম এ এস ওডারল্যান্ড।
  • ওডারল্যান্ডের মৃত্যুর পর, পার্থে তাকে দাফন করা হয়।
  • বীর প্রতীক ওডারল্যান্ডের নামে ঢাকার গুলশানে একটি রাস্তার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক অনুষ্ঠানে সম্মাননা লাভ করেন মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আহসান খান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অস্ত্র হাতে অংশ নিয়েছিলেন তারা তিন ভাই, বড় ভাই মঞ্জুরুল আহসান খান, কামরুল আহসান খান এবং খায়রুল আহসান খান।

১৯৯৪ সালে কামরুল আহসান খান যখন অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের জন্য আসেন, তখন তাকে অন্য কোনো বিষয়ে উপদেশ কিংবা পরামর্শ দেন নি তার বড় ভাই, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম নেতা, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আহসান খান। বরং, তিনি একটি চিঠি লিখে দেন উইলিয়াম এ এস ওডারল্যান্ডের নামে।

১৯৯৪ সালের জুন মাসে কামরুল আহসান খান ব্রিসবেনে আসেন। এর আগে অবশ্য তিনি ১৯৮৮ সালে একবার একটি কনফারেন্সে যোগদানের জন্য অস্ট্রেলিয়া ঘুরে গেছেন। যাহোক, এবার যখন অভিবাসনের জন্য এলেন, তখন তার হাতে তার বড় ভাইয়ের দেওয়া চিঠি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব “বীর প্রতীক” খেতাবধারী একমাত্র বিদেশী ওডারল্যান্ডের নামে।

“তিনি আমাকে একটা চিঠি দিলেন, সাদা খামে, আমার স্পষ্ট মনে আছে। নাম লেখা ওডারল্যান্ড”, বলেন কামরুল আহসান খান।

“তিনি বললেন, তুমি এটা ওডারল্যান্ডের হাতে পৌঁছে দিবে। আমি চিঠি নিয়ে আসলাম। তখন আমি ব্রিসবেনে। আমার প্রথম মাইগ্রেশন ব্রিসবেনে ১৯৯৪ সালে, জুন মাসে আমি এসেছিলাম।”

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ওডারল্যান্ডের সঙ্গে মঞ্জুরুল আহসান খানের কোনো প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল কিনা সে সম্পর্কে কামরুল আহসান খান বলতে পারেন নি। তবে, এটা বলেছেন যে, তার বড় ভাই ওডারল্যান্ড সম্পর্কে জানতেন।
ওডারল্যান্ড তখন পার্থে বসবাস করতেন। অভিবাসনের শুরুতে তাই কামরুল আহসান খান ব্রিসবেন থেকে পার্থে যেতে পারেন নি।

“আমি ভেবেছিলাম নিজে হাতে দিয়ে আসবো। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পার্থ যে (ব্রিসবেন থেকে) এত দূরে, এত ঘণ্টার রাস্তা, এটা আমার ধারণা ছিল না। পরে, আমি তাকে ফোন করে আমি ঐ চিঠিটা ওডারল্যান্ডকে পোস্ট করে দিই। সেটিই আমার প্রথম যোগাযোগ। পরে আমি তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি।”

“অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে আমিই সর্বপ্রথম ওডারল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমর্থ হই।”

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের পরবর্তী ঘটনা-প্রবাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছিলেন ওডারল্যান্ড, বলেন কামরুল আহসান খান।

ওডারল্যান্ড মেমোরিয়াল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা কামরুল আহসান খান বলেন, ঢাকায় ওডারল্যান্ডের নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে তাদের উদ্যোগে। এজন্য তিনি ঢাকার তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এছাড়া, ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ওডারল্যান্ড লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও কামরুল আহসান খান অবদান রেখেছেন বলে জানান।

কামরুল আহসান খানের সাক্ষাৎকারটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .


Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand