করোনাভাইরাসের সময় অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বর্ণবাদের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে

The coronavirus has had a negative impact on international students

The coronavirus has had a negative impact on international students Source: Getty

করোনাভাইরাসের সময় অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৬,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বর্ণবাদের শিকার হয়েছে। সেই সাথে চাকরি হারিয়ে জীবন যাপন কষ্টকর হয়ে উঠেছে এবং এমনকি তারা গৃহহীন হয়ে পড়ার শংকায় আছে।


তুলসিকা রাওয়া গত বছরের মার্চ থেকে মেলবোর্নে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। ২১ বছরের এই তরুণী ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে তিন বছরের ক্রিমিনাল জাস্টিস কোর্স নিয়ে পড়ছেন, প্রথমে তিনি কিছুটা ভীত ছিলেন কিন্তু অভিজ্ঞতা নিতে চাচ্ছিলেন। 

"আমি মরিশাসের মত ছোট জায়গা থেকে এসে ভাবছিলাম অস্ট্রেলিয়ায় আমার থাকা কেমন হবে, কিন্তু আমি দেখলাম লোকজন এখানে খুব সাহায্য করছে।" 

কিন্তু তিনি বলেন, সবই বদলে গেলো যখন কভিড ১৯ হানা দিলো। 

তার গল্পটি কিন্তু অন্যদের চেয়ে আলাদা নয়। রে জেনকিন্স নিউ ইয়র্ক থেকে এসেছেন এবং পাঁচ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় থাকছেন।  

তিনি লা ট্রোব ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স নিয়ে ব্যাচেলর সম্পন্ন করেছেন এবং এখন মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টে মাস্টার্স করছেন। 

২৩ বছরের এই তরুণ সাম্প্রতিক কালে বৈষম্যের অভিজ্ঞতা পেয়ে হতাশ হয়েছেন। 

তিনি বলেন, "গতকালই একটি শপিং মলে আমার খারাপ অভিজ্ঞতা হল, সিকুরিটি গার্ড আমাকে অনুসরণ করছিল, প্রতিটি আইলে আমি যেদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম, খুবই শকিং আমার জন্য, অবশ্য আমি আমার দেশেও একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই ।" 

মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ পরিচালিত ৬০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এক জরিপে দেখা গেছে প্রাদুর্ভাবের সময়ে ২৩ ভাগ শিক্ষার্থী বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার এবং ২৫ ভাগ বলেছে লোকজন তাদের এড়িয়ে গেছে তাদের চেহেরার কারণে। 

এসোসিয়েট প্রফেসর লরি বার্গ এই রিপোর্টের অন্যতম লেখক।

তিনি বলেন, "সম্ভবত কভিড ১৯-এর কারণে আগেই থেকেই কমিউনিটিতে চলতে থাকা বর্ণবাদ যেন আরও খারাপ হয়েছে, আর অস্থায়ী অভিবাসীরা তার মূল্য দিচ্ছে।" 

জুলাইয়ে করা এই গবেষণায় দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা বেশ আর্থিক কষ্টেও ভুগছে।  প্রায় ৭০ ভাগ তাদের কাজ হারিয়েছে, এবং ৩২ ভাগ তাদের পরিবারের পাঠানো অর্থের ওপর নির্ভর করতে পারছিলো না।  

প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বলেছে তারা বাড়ী ভাড়া দিতে পারছে না, ৪২ ভাগ গৃহহীনতার ভয়ে আছে, এবং ২৮ ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে খাবারের টাকা নেই।  

এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৩৩ ভাগ শিক্ষার্থীর চারিটিগুলোর কাছে বাঁচার জন্য জরুরী সহায়তা চাইতে হয়েছে। 

কিন্তু ভবিষ্যতে অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে, ৫৭ ভাগেরও বেশি শিক্ষার্থী এই বছরে তাদের আর্থিক অবস্থা আরো বাজে হবে বলে মনে করছে, তাদের ৩৫ ভাগ বলছে আগামী এক মাসের মধ্যে তারা কপর্দক শূন্য হয়ে পড়বে।  

তার ওপর বর্ণবাদের শিকার হওয়া তুলসিকা বলেন, তিনি কাজ হারিয়েছেন এবং পরিবারের ওপরও নির্ভর করতে পারছেন না, কারণ করোনার প্রভাবে তাদের অবস্থাও খারাপ হয়েছে। 

জুন পর্যন্ত প্রায় ৬ শত ৩৭,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে, ২০১৯-এ এই সংখ্যাটি ছিল ৭ শত ৫৮,০০০।  এই শিক্ষার্থীরা মোট শ্রমবাজারের ১০ ভাগ পূরণ করে, কিন্তু তারা ফেডারেল সরকারের ওয়েলফেয়ার সাপোর্ট পাওয়ার যোগ্য নয়।  

এসোসিয়েট প্রফেসর লরি বার্গ বলেন, এই নীতির পরিবর্তন হওয়া উচিত।  

কমুনিটির কাছে তুলসিকার কিছু আবেদন আছে, তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়াকে আগের মতোই ওয়েলকামিং রাখুন। 

করোনাভাইরাস বিষয়ে হালনাগাদ তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: sbs.com.au/coronavirus 

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন 

আরও পড়ুনঃ 

Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand