মাইক্রো-প্লাস্টিক নিয়ে আরও গবেষণার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

A sample of water that contains possible microplastics at a water treatment plant in the US

A sample of water that contains possible microplastics at a water treatment plant in the US. Source: AAP

মাইক্রো-প্লাস্টিক নিয়ে আরও গবেষণার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাইক্রো-প্লাস্টিক হলো প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা, যা মাটিতে এবং পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশে গিয়ে অবশেষে আশ্রয় নিচ্ছে আমাদের পাকস্থলিতে। মানবদেহের ওপর মাইক্রো-প্লাস্টিকের কুপ্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানিরা এখনও তেমন কিছু জানেন না। তবে, ভবিষ্যতে বিপদ এড়াতে আরও গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।


প্রতিবছর আট মিলিয়ন টন প্লাস্টিক মিশে যাচ্ছে পানি-নিষ্কাষণ প্রণালীর সঙ্গে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত বড় প্লাস্টিকের টুকরা, যেমন বোতল ও ব্যাগ থেকে শুরু করে মাইক্রোপ্লাস্টিক, প্লাস্টিকের কণা যেগুলোর আকার ৫ মিলিমিটারেরও ছোট টুকরা রয়েছে এই তালিকায়।
 
গবেষকরা ক্রমাগতভাবে মাইক্রো-প্লাস্টিক নিয়ে উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। তারা দেখতে পেয়েছেন যে, পানীয় জলে উচ্চ মাত্রায় মাইক্রো-প্লাস্টিক মিশে যাচ্ছে।
 
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবদেহে মাইক্রো-প্লাস্টিক প্রবেশ করছে। তবে, এর সরাসরি প্রভাব বা কুফল সম্পর্কে তারা এখনও অবহিত নয়।
 
ম্যাকোয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী পল হার্ভে বলেন, বিজ্ঞান এখনও সে পর্যন্ত পৌঁছে নি।
 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে বলছে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের মাইক্রো-প্লাস্টিক, যেগুলোর আকার ১৫০ মাইক্রো-মিটারের চেয়ে বড়, সেগুলো হয়তো শরীর থেকে বের হয়ে যাবে। তবে তারা তুলনামূলকভাবে ছোট কণাগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন। যেগুলোর মধ্যে রয়েচে ন্যানো-সাইজের প্লাস্টিক, যেগুলো আমাদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মিশে যাবে, রক্ত-প্রবাহের সঙ্গে মিশে যাবে এবং রোগ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটিরিয়া বহন করবে।
 
মিস্টার হার্ভে বলেন, এটি এমনই একটি ক্ষেত্র যা নিয়ে বিজ্ঞানিরা আরও গবেষণা করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে যে, এক্ষেত্রে গবেষণার অভাবে তারা মনে করে, মাইক্রো-প্লাস্টিকের যে ঝুঁকি তা অনেক কম।
 
মিস্টার হার্ভে বলেন, এই সিদ্ধান্তটির মধ্যে সমস্যা রয়েছে। তিনি মনে করেন, এই বিষয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয় নি, তার মানে এটা নয় যে, এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
 
মাইক্রো-প্লাস্টিকের বিষয়টি মাত্র গত দশ বছরে পাবলিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে এ নিয়ে তেমন একটা গবেষণা না হওয়ার বিষয়টিকে অনেকে দায়ী করছেন।
 
নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রেমেডিয়েশন-এর ড. তা-ভা পালানি-স্বামী বলেন, আগামী কয়েক বছরে এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত গবেষণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এটা নয়।
 
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মানুষের স্বাস্থ্য-ঝুঁকির কথা বাদ দিয়েও বলা যায়, নীতি-নির্ধারকদের উচিত যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা আর জনগণের উচিত প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং যেখানে যেখানে সম্ভব এর ব্যবহার কমিয়ে আনা।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষিত পানি শোধন করা হলে ভাল হবে। এতে করে পানিতে মিশে থাকা শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মাইক্রো-প্লাস্টিক শোধন করা যাবে, যেমন, ফিল্টারের মাধ্যমে।
 
নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এবং এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার স্টুয়ার্ট খান বলেন, এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে, মিস্টার খান স্বীকার করেন, মাইক্রো-প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় হলো ব্যাপকভাবে প্লাস্টিক-দূষণ বন্ধ করা।
 
তিনি বলেন, প্লাস্টিকের বিকল্পগুলোর প্রতি বিনিয়োগ করাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।




Follow SBS Bangla on .

Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand